গত বছর মহামারীকালে চন্দননগর সবরকম বিধিনিষেধকে মান্যতা দিয়ে জগদ্ধাত্রী পূজা করে দেখিয়েছে। কিন্ত মহামান্য হাইকোর্টের রায় অনুসারে গত বছর আমাদের বিশ্ববন্দিত শোভাযাত্রার আয়োজন করা যায়নি। এবছরেও এখনো অবধি পরিষ্কার নয় যে শোভাযাত্রা করানো সম্ভব কি না। এবং এই শোভাযাত্রার সাথেই প্রতক্ষ্য এবং পরোক্ষভাবে যুক্ত চন্দননগরের আলোকশিল্প। গত বছর শোভাযাত্রা না হওয়ায় বেশিরভাগ আলোকশিল্পী অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়ে। এমতবস্থায় সকলের চোখ ছিলো চন্দননগর কেন্দ্রীয় জগদ্ধাত্রী পূজা কমিটির বার্ষিক সাধারণ সভার ওপর। প্রতিটি চন্দননগবাসীর মনের কমন প্রশ্ন ছিলো, ‘এবছর প্রসেশন হচ্ছে?’
গতকাল, (২৯/৮/২১) চন্দননগর কেন্দ্রীয় জগদ্ধাত্রী পূজা কমিটি, ভার্চুয়াল মাধ্যমে এবছরের বার্ষিক সাধারণ সভার আয়োজন করেন। ১৭১টি পূজা কমিটি থেকে একজন করে প্রতিনিধি এই ভার্চুয়াল সভায় যোগদান করেছিলেন। উক্ত সভায় এবছরের জগদ্ধাত্রী পূজা বিষয়ক বেশ কিছু প্রস্তাব এবং সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তার মধ্যে শোভাযাত্রা আয়োজনের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় কমিটি জানিয়েছেন যে “প্রশাসন যদি শোভাযাত্রা আয়োজনের অনুমতি দেয়, সেক্ষেত্রে করোনা পরিস্থিতির ওপর বিচার বিবেচনা করে চন্দননগর কেন্দ্রীয় জগদ্ধাত্রী পূজা কমিটি শোভাযাত্রা আয়োজন করতে প্রস্তুত।” অর্থাৎ পরিস্থিতি যদি স্বাভাবিক থাকে এবং প্রশাসনের সবুজ সংকেত থাকলে আমরা আবার এবছর শোভাযাত্রা চাক্ষুস করতে পারি। সেক্ষেত্রে আমাদের সকলের দায়িত্ব আমাদের শহরের সুস্থতা রক্ষা করা। আসুন আমরা মা জগদ্ধাত্রীর কাছে সকলে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই, বাড়ির বাইরে সর্বদা সঠিকভাবে মাস্ক পড়বো। যথা সম্ভব সামাজিক দুরত্ববিধি মেনে চলবো এবং টিকাকরণে সকলে বিশেষভাবে যোগদান করবো।
মহামারী এবং লকডাউনের কারণে চন্দননগরের আলোকশিল্প অনেকাংশেই ক্ষতিগ্রস্ত। এই পরিস্থিতিতে চন্দননগরের আলোকশিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করার উদ্দেশ্যে এক বিশেষ সিদ্ধান্ত নেন চন্দননগর কেন্দ্রীয় জগদ্ধাত্রী পূজা কমিটি। ওই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, জগদ্ধাত্রী পূজার দিনগুলিতে মানুষ এবং যানবাহন চলাচলের জন্য পথ উন্মুক্ত রেখে আলোকসজ্জা প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা। চন্দননগরকে আলোয় সাজিয়ে তুলতে হবে ঠিক আগের মত।
চন্দননগরের ঐতিহ্য এই শোভাযাত্রা। আমরা চাই শোভাযাত্রা হোক, তবে সবরকম নিয়ম এবং বিধিনিষেধ মেনেই। একমাত্র শোভাযাত্রার মাধ্যমেই আমরা আমাদের আলোর জাদুকরদের পাশে সঠিকভাবে দাঁড়াতে পারি।